(শর্টফিল্মটি দেখতে ছবিতে ক্লিক করুন)
আমরা যারা প্রতিনিয়ত শর্টফিল্ম দেখি ইদানিং কেউ কেউ বিরক্ত হয়ে পড়ছি এই দেখে যে টেলি-সিরিয়ালগুলির মত শর্টফিল্ম মেকাররাও সস্তা জনপ্রিয়তার দিকে এগিয়ে চলছেন। সেই একই ফ্যামিলি গসিপ, ড্রয়িং রুম ড্রামা, কিম্বা ধর্মীয় আবেগ। শর্টফিল্মে এর সাথে থাকে যৌন সুড়সুড়ির সমাহার, যেটা আবার টেলি সিরিয়ালে সম্ভব নয়। কিছু অর্ধপর্নো ফিল্ম দশ বিশ লক্ষ দর্শক নিয়ে শর্ট ফিল্মের দুনিয়া কাঁপাচ্ছে। এসব নিয়েই মেতে থাকে ইউটিউবাররা এবং তাদের দর্শক। এরই মাঝে স্ক্রল করতে করতে চোখে পড়ে যায় বা কোনো বন্ধুর অনুরোধে চোখ খু্ঁজতে যায় এমন কিছু শর্ট ফিল্মকে যেগুলো চোখকে আরাম দেয়। টিভি বা স্যোসাল মিডিয়া খুললেই যেখানে হতাশার ছবি সেখানে কিছু কিছু গল্প, কিছু কিছু ফিল্ম আমাদের বেঁচে থাকার মানে বুঝিয়ে দিলে মনটা ভালো হয়ে যায় বইকি। এরকমই একটি গল্পকে নিয়ে শর্টফিল্ম " দ্য অরফ্যান লিউট" বানিয়েছেন বিপ্লব দাস। 'ব্ল্যাকমিল্ক প্রোডাকশন' এর ব্যানারে পরিচালকের এটিই প্রথম কাজ। ছবিটির ইউটিউবে গত ১ মে, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে মুক্তি পেয়েছে।
মিষ্টির দোকানে কাজ করা একটি শিশুর জীবনের একটি সকাল এই ছবির মূল প্রতিপাদ্য। ফিল্মে আরেকটি কিশোর আছে, সম্ভবত শিশুটির দাদা, সেও দোকানে কাজ করে। আর আছে দোকানদার এবং অন্যান্যরা। দোকানীর কড়া হুকুমে নদীতে বাসনপত্র মাজতে গিয়ে শিশুটি সাতসকালেই একটি পীড়াদায়ক ঘটনা দেখে। সেখান থেকে উদ্ভুত সমস্যা এবং মোকাবিলার চেষ্টা নিয়েই মাত্র ছ' মিনিটের এই ছবি।
সোমসুন্দর বিশ্বাসের ক্যামেরায় দু তিনটি দৃশ্য বেশ নজর কাড়ে, বিশেষ করে নদীর বুকে তোলা লং শটগুলি। যদিও অনাবশ্যক দীর্ঘায়িত কিছু দৃশ্য দর্শক মনসংযোগে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এধরণের ছোটো ছবিতে সম্পাদনা যতটুকু ছাপ ফেলতে পারে সেটুকুই ফেলেছে। ছবির সম্পাদনা নির্মাল্য দত্তর। সুরও তিনিই দিয়েছেন। যেহেতু নির্বাক ছবি তাই সুর আরও বেশি দাবি করছিল। দর্শকদের মনে হতেই পারে সুর সেই দাবি মেটাতে পারেনি। কোথাও যেন একটা খামতি থেকে গেছে।
আমরা যারা ছোটো ছবির দলগুলিকে চিনি, জানি যে কি অসম্ভবের মাঝ দিয়ে তাদের এগিয়ে যেতে হয়। প্রতিকুলতা তাদের প্রতিটি গল্পের জন্মদাতা।
মাত্র ছমিনিট ব্ল্যাকমিল্কের পরবর্তী ছবিগুলির জন্য প্রত্যাশা আরও বাড়িয়ে দিয়ে গেল।
0 মন্তব্যসমূহ