মুক্তমনাদের হত্যার সমীকরণ ।। অনির্বাণ দাসগুপ্ত


অনেক দিন ধরেই বহু চর্চিত এই ইক্যুয়েশানটা মেলাতে চেষ্টা করছি, পারছি না। মৃত্যুঞ্জয়ী শাহজাহান বাচ্চু বা কালবুর্গীর মৃত্যু দিয়েও এই কয়দিন অনেক চেষ্টা করলাম, পারলাম না। একটু সাহায্য করুন। 

বিজেপি = জামাত, RSS = IS ! 

আসুন, দূরে নয়, আমাদের পাশাপাশি হিন্দু প্রধান আর মুসলিম প্রধান তিন চারটি রাষ্ট্র নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করি। 

মুসলিম প্রধান পাকিস্তান আপাতত তুলনার বাইরে, সেখানে লুপ্ত প্রায় সংখ্যালঘুদের যত্ন করে সংরক্ষণ করে রাখা আছে। হিন্দু প্রধান এই দেশ চালাচ্ছে RSS নিয়ন্ত্রিত চরম হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার । অপরদিকে বাংলাদেশে কিন্তু তথাকথিত ধর্ম নিরপেক্ষ মানসিকতার বলে কথিত শেখ হাসিনার সরকার। অথচ এদেশে এক বিতর্কিত বাবরি মসজিদ ছাড়া এত বছরে আর কোন মসজিদে কেউ ঢিলও ছুঁড়ে নি এতবছরে। আর বাংলাদেশে? মন্দির আর মূর্তি ভাংচুর তো নিত্যদিনের অতি সাধারণ ঘটনা। শরৎ কাল এলেই শুরু হয়ে যায় মূর্তি ভাঙার উৎসব। ধর্ম নিরপেক্ষ মানসিকতার লীগ সরকারেই এমন, যদি জামাত আসে ক্ষমতায়, তখন ? 

মনে রাখবেন ভারতের বিজেপি আর বাংলাদেশের জামাত কিন্তু ইক্যুইভ্যালেন্ট! 

কতবড় বিশাল দেশ এই ভারত....। দেশটাকে চালাচ্ছে আর এস প্রভাবিত হিন্দুত্ববাদী সরকার , অথচ বিচ্ছিন্ন একটা দুটো আখলাখ পেহেলুরা সারা দেশ তোলপাড় করে ফেলে। আর ভারতের একটা প্রদেশের সমান বাংলাদেশে কত শত হিন্দু 'আখলাখ' আর 'পেহেলু' রা খুন হচ্ছে ? মনে রাখবেন বাংলাদেশে কিন্তু ধর্ম নিরপেক্ষ মানসিকতার হাসিনার সরকার। আর যদি জামাত আসে ক্ষমতায় , তখন....? 

মনে রাখবেন ভারতের বিজেপি আর বাংলাদেশের জামাত কিন্তু ইক্যুইভ্যালেন্ট ! 

বিশাল দেশটা চালাচ্ছে হিন্দুত্ববাদী সরকার, এক আসিফা নিয়ে সারা বিশ্ব তোলপাড় । ছোট্ট বাংলাদেশে রোজকার হিন্দু নারী ধর্ষণ রোজকার খবরে কোনো আলাদা মাত্রা যোগ করে কি ? মনে রাখবেন, বাংলাদেশে কিন্তু ধর্ম নিরপেক্ষ মানসিকতার সরকার। যদি জামাত আসে ক্ষমতায়, তখন...? 

মনে রাখবেন ভারতের বিজেপি আর বাংলাদেশের জামাত কিন্তু ইক্যুইভ্যালেন্ট ! 

সন্ত্রাসবাদী RSS প্রভাবিত হিন্দু প্রধান এই দেশে ছোট বড় অগুণতি তথাকথিত মুক্তমনার দল শুধু হিন্দু মৌলবাদ নিয়ে নয় - হিন্দু ধর্ম নিয়ে, এমনকি আরাধ্য দেব দেবী নিয়ে প্রকাশ্যে রোজ নোংরামী করতে পারছে, অশ্লীল ছবি আঁকতে পারছে। শিব লিঙ্গে কন্ডোম পরাতে পারছে । অথচ কী আশ্চর্য, এদের কল্লা কিন্তু যাচ্ছে না, দেশান্তরীও হতে হচ্ছে না। বড়জোর একটা FIR। এতেই নাকি অসহিষ্ণুতার চুড়ান্ত ! RSS প্রভাবিত অসহিষ্ণু হিন্দু প্রধান এই দেশে আমি ভরা বাজারে চিৎকার করে বলতে পারছি - আমি ধর্ম মানি না, হিন্দু ধর্ম একটা বর্বর ধর্ম। সাংবাদিক ডেকে ক্যামেরার সামনে প্রকাশ্যে কড়মড়িয়ে গরুর মাংস খেতে পারছি। কি আশ্চর্য, আমার কল্লা কিন্তু যাচ্ছে না ! এমনটা ভাবুন না, অসাম্প্রদায়িক সরকারের মুসলিম প্রধান বাংলাদেশে? মুসলিম প্রধান 'অসাম্প্রদায়িক' বাংলাদেশে ইসলামের সমালোচনা করলেই, আমি ধর্ম মানি না বললেই কল্লা শেষ, নয়তো দেশান্তরী । যদি জামাত সরকারে আসে ? 

জঙ্গি RSS প্রভাবিত কতবড় বিশাল হিন্দু প্রধান এই দেশ ! কিন্তু কালবুর্গী, পানেসার...., জপার মতো আর নাম তো পাচ্ছি না!

ভারতের ছোট্ট একটি প্রদেশের সমান ধর্ম নিরপেক্ষ মানসিকতার বলে প্রচারিত মুসলিম প্রধান বাংলাদেশ !

অভিজিৎ, নীলয় নীল, ওয়াশিকুর, রাজীব হায়দার, অনন্ত বিজয়, আরিফ রায়হান ...,  না জায়গা হবে না। সর্বশেষ শাহজাহান বাচ্চু! মনে রাখবেন, এই দেশটা হিন্দু প্রধান, আর দেশটা চালাচ্ছে আই এস এর সমতুল্য আর এস এস প্রভাবিত হিন্দুত্ববাদী সরকার। আর বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান, দেশটাতে আছে তথাকথিত ধর্ম নিরপেক্ষ মানসিকতার হাসিনার আওয়ামী সরকার। আর যদি জামাত আসে ক্ষমতায়..., তখন ? 

বাদ দিন মুসলিম প্রধান বাংলাদেশ । হিন্দু প্রধান এই দেশে এখনই কি ইসলামের বিরুদ্ধে বলায় ফারুকদের প্রকাশ্যে কোপায় না মুসলিম মৌলবাদীরা? হামলা হয় না অসুস্থ বৃদ্ধ তারেক ফতের উপর? প্রাণ ভয়ে পালাতে হয় না তসলিমাকে? IS এর সমতুল্য RSS এর দাপাদাপিতে এই দেশে ভয়ে সবাই তটস্থ, ব্যাক্তি স্বাধীনতার কিচ্ছু অবশিষ্ট নেই। কিন্তু তবুও হিন্দুদের আরাধ্য শ্রীরামকে প্রকাশ্যেই জুতোপেটা করা যাচ্ছে, কিন্তু ভুলেও মহম্মদকে নিয়ে একটি কথা বলারও সাহস নেই। এই সেদিন নিছক মজা করে ফেসবুকে ধর্মীয় স্ট্যাটাস দেওয়ায় হোস্টেল থেকে বের করে মারার হুমকি, প্রাণনাশের হুমকির মুখে বেশ কয়েকজন ছাত্র ছাত্রী বিলকুল নিখোঁজ হয়ে গেল ! তা'ও কোথায়? আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির মতো উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে! যদিও এইসব ক্ষেত্রে অসহিষ্ণুতার মাত্রাটা প্রগতিশীলরা মাপতে বসে না কল্লার ভয়ে । যাই হোক, হিন্দুত্ববাদের রমরমাতেই এই অবস্থা, আর হিন্দুত্ববাদ দুর্বল হয়ে যখন ইসলাম কায়েম হবে...? 

মনে রাখবেন ভারতের বিজেপি আর বাংলাদেশের জামাত কিন্তু ইক্যুইভ্যালেন্ট! 

ত্রিসীমানায়, পুরো এলাকা জুড়ে আশেপাশে কোন মুসলিম বাড়ি নেই, পুরো হিন্দু এলাকা। মাঝখানে একটি বা দুটি মাত্র মুসলিম পরিবার। দিব্যি শান্তিতে হিন্দুদের উপর দাপটে বাস করছে। বা পুরো হিন্দু এলাকা, মাঝখানে পুরোনো একটা মসজিদ বা মাজার, কেউ দখল করে নেয় নি। RSS প্রভাবিত সাম্প্রদায়িক বিজেপি শাসিত এদেশে এমন উদাহরণ ভুরি ভুরি। কিন্তু এসবের উল্টোটা ভাবুন, মুসলিম প্রধান 'অসাম্প্রদায়িক' হাসিনার বাংলাদেশে ! এবার ভাবুন সেখানে যদি জামাত আসে ক্ষমতায়, তখন ! 

মুসলিম প্রধান রাষ্ট্র নিয়ে ভাবতে ভয় লাগছে? ঠিক আছে, হিন্দু প্রধান সাম্প্রদায়িক বিজেপি শাসিত নিজের দেশেরই কোন মুসলিম মহল্লায় একটি হিন্দু পরিবার থাকার সাহস পাবে কি, থাকবে কোন মন্দিরের অস্তিত্ব ? নিজেকে নিয়ে ভাবুন, মুখে বড় বড় কথা বললেও এই হিন্দুত্ববাদী কেন্দ্রীয় সরকারের আমলেই পার্ক সার্কাস বা মেটিয়াবুরুজে আপনার যদি খুব সস্তায় একটা বাড়ি কেনার সুযোগ আসে, কিনবেন কি? এখনই এই, আর ক্ষমতা যখন চলে যাবে ওদের হাতে, তখন ! 

মনে রাখবেন ভারতের বিজেপি আর বাংলাদেশের জামাত কিন্তু ইক্যুইভ্যালেন্ট! 

 দেশ চালাচ্ছে জঙ্গি হিন্দুত্ববাদীরা, অথচ হিন্দু প্রধান এই দেশে সংখ্যাগুরুরাই সংখ্যালঘুদের হাতে বেশি নির্যাতিত হচ্ছে, হয়েই চলেছে । বাংলাদেশের রংপুর বা নাসিরনগরের মতোই এই বাংলাতেও ফেসবুক পোষ্টকে কেন্দ্র করে 'সংখ্যাগুরুদের ভয়ে সবসময় সিঁটিয়ে থাকা' সংখ্যালঘু মুসলমানরা একের পর এক গুঁড়িয়ে দিচ্ছে সংখ্যাগুরুদের বসতি। কালিয়াচক, ধুলাগড়, দেগঙ্গা, বাদুড়িয়া...! পুড়িয়ে ছারখার করে দিচ্ছে পুরো থানা। শরিয়তের সমর্থনে, রোহিঙ্গাদের সমর্থনে, দেশদ্রোহী সন্ত্রাসবাদীর জানাজায় বিশাল জঙ্গি মিছিল করছে নির্যাতিত সম্প্রদায় । প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সবার বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করছে, পনের মিনিটে সব সংখ্যাগুরুদের নিকেশ করার হুমকী, হিন্দুদের আরাধ্যদের নিয়ে কটুক্তি - সব করছে এই দেশে ভয়ে ভয়ে কাঁপতে থাকা মুসলমানরা। এক আখলাখ বা পেহেলু খানের বিপরীতে কত শত অঙ্কিত, ইন্দ্রজিত, রোহিত তাঁতি দের ঠান্ডা মাথায় খুন করছে। এত বছরের এক বাবরির বিপরীতে এই পশ্চিম বাংলার বাদুড়িয়া, ধুলাগড় বা কালিয়াচকে কত অসংখ্য মন্দির জেহাদী আক্রমণে গুঁড়িয়ে গেল। এক আসিফার আওয়াজে চাপা পড়ে যায় হাজার হাজার গীতা, পূজা, টুইঙ্কল বা বনশ্রীর কান্না। প্রায় রোজই দেশের কোথাও না কোথাও ধর্ষিতা হচ্ছে, ধর্ষণের পর খুন হচ্ছে সংখ্যাগুরু মেয়েরা ভয়ে কাঁপতে থাকাদের হাতে ! মনে রাখবেন এই দেশকে পরোক্ষে চালাচ্ছে কিন্তু IS এর সমতুল্য RSS সন্ত্রাসবাদীরা। এখনই এই, আর যদি ওদের হাতে ক্ষমতা আসে? 

বাংলাদেশ কিন্তু এমন নয়, বাংলাদেশ চালাচ্ছে ধর্ম নিরপেক্ষ মানসিকতার শেখ হাসিনা। ধর্মান্ধ হিন্দুদের এই দেশে আখলাখদের পাশাপাশি ইন্দ্রজিত, চন্দন বা অঙ্কিতদেরও নৃশংস ভাবে খুন করা হয়। কিন্তু অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে কেন জানি শুধু বিশ্বজিৎরাই খুন হয়, হিন্দুরা কেন রাগের মাথায় ওখানে একটা 'আখলাখ' কে ও মারে না? অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে যারা নাসিরনগর, রংপুর, রামু, মালোপাড়া করে, তারাই তো RSS এর মতো হিন্দু সন্ত্রাসবাদীর দেশেও কালিয়াচক, ধুলাগড় বাদুড়িয়া করে । এদেশেও ওরাই সংখ্যালঘু হয়ে সংখ্যাগুরুদের উপর অত্যাচার করবে, বানতলা, কামদুনি, পার্ক স্ট্রিট করবে। কিন্তু হিন্দুরা কেন জানি এত অত্যাচারের পরও ভুলেও ঐ অসাম্প্রদায়িক দেশে একটাও 'কালিয়াচক' বা 'বাদুড়িয়া' করার কথা ভাবতেও পারে না। হিন্দুরা কেন জানি ভুলেও সাময়িক উত্তেজনা বা আবেগের বশে ওদেশে একটাও বানতলা বা কামদুনি করে না, এদেশের মতো দল বেঁধে সংখ্যাগুরুদের উপাসনা স্থল গুঁড়িয়ে দেওয়ার কথা ভাবতেও পারে না। আর একটা যদি বানতলা ধুলাগড় করে ফেলে, একটা খাগড়াগড় হয়ে যায় - একজন হিন্দুরও আর সেখানে থাকা সম্ভব হত না।  এতো এতো অত্যাচার সহ্য করলেও বাংলাদেশে কেন জানি হিন্দু মৌলবাদ বা সংখ্যাগুরু সম্প্রদায় বিরোধী সন্ত্রাসবাদের অস্তিত্ব নেই। নেই, কারণ কিছু না করেই ওদেশে হিন্দুদের যা অবস্থা, রাগের মাথায় একটা 'বাদুড়িয়া' করে ফেললে বা একটা 'আখলাখ' কে মেরে ফেললে একজন হিন্দুরও আর সেদেশে থাকা সম্ভব হবে না। কোনমতে বেঁচে থাকা আর কোনমতে টিঁকে থাকার মধ্যেই বাংলাদেশের হিন্দুদের সর্বোচ্চ চাহিদা সীমাবদ্ধ। এদেশে মুসলমানরা যা যা নিয়মিত করছে, করেই চলেছে, বাংলাদেশে কোন হিন্দু ব্যতিক্রমী হিসেবেও এরকম একটি ঘটনা করলে কোন হিন্দু আর সেদেশে থাকতে পারত না। কিছু না করেই যা অবস্থা, এরকম একটি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই পুরো বসতি জ্বালিয়ে দেওয়া হত, মহিলাদের টেনে টেনে এনে গণ ধর্ষণ করা হতো। এদেশে ব্যতিক্রমী দুর্ভাগ্যজনক গুজরাত দাঙ্গার কথা শ্বাসে শ্বাসে উচ্চারণ করার আগে সবাই ভুলে যায় যার প্রতিক্রিয়ায় সেই দাঙ্গা ঘটেছিল সেই গোধরার কথা। বাংলাদেশে যদি এরকম একটা ঘটনা ঘটতো, না ঘটলেও যদি প্রচার করা হত, কী অবস্থা হত হিন্দুদের? একজনও কি থাকতে পারতো? মনে রাখবেন, বাংলাদেশে কিন্তু একটা অসাম্প্রদায়িক সরকার। আর যদি জামাত হতো , তখন ? 

আরো মনে রাখবেন ভারতের বিজেপি আর বাংলাদেশের জামাত কিন্তু ইক্যুইভ্যলেন্ট! 

RSS প্রভাবিত সাম্প্রদায়িক মোদীর ভারতে সংখ্যালঘুরা যে স্বাধীনতা ভোগ করে, এর ছিঁটেফোঁটাও কি অসাম্প্রদায়িক হাসিনার বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা ভোগ করে? 

এরপরও যারা বিজেপিকে জামাত,  আর RSS কে IS এর সমান করে দেখায় - তাদের আসল উদ্দেশ্য কী? কোন উদ্দেশ্যে এরা এই অসমকে সমান, চুড়ান্ত বিসদৃশকে সাদৃশ্য, অসামঞ্জস্যকে সামঞ্জস্য করে দেখাতে চাইছে? তাহলে কি ইসলামিক আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় হিন্দুত্ববাদের উত্থান বর্বর ইসলামিক আগ্রাসনের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেই বিদেশী প্রভুর এদেশী এজেন্টরা এদের নিয়োগ করে রেখেছে, অনেক উদার হিন্দুত্ববাদকে বর্বর ইসলামের সমান দেখিয়ে দুর্বল করে দিতে ? হিন্দু প্রধান এই প্রগতিশীল ভারতকে মুসলিম প্রধান মৌলবাদী বাংলাদেশ পাকিস্তান হয়ে ইরাক সিরিয়া বানাতে? যখন হিন্দুত্ববাদের প্রভাব কমে গিয়ে ইসলাম কায়েম হয়ে যাবে, তখন কোথায় যাবে এদের এই প্রগতিশীল মুক্ত মনের আওয়াজ? 

মুখে অনেক কিছু বললেও, এদের যদি থাকার জন্য RSS প্রভাবিত হিন্দু রাষ্ট্র আর IS প্রভাবিত মুসলিম রাষ্ট্রের মধ্যে একটি বেছে নিতে বলা হয়, বলুন তো কোনটা বেছে নেবেন.... ? এমনকি এদেশে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকা, ভয়ে সবসময় সিঁটিয়ে থাকা মুসলমানরা পর্যন্ত ? RSS প্রভাবিত এদেশে মুসলিমরা একদমই নিরাপদ নয়, অথচ রোহিঙ্গারা দলে দলে নিরাপদ আশ্রয় হিসাবে এদেশে এসে ঢুকছে, এদেশের মুসলমানরা এদের আশ্রয়ের দাবীতে জঙ্গি আন্দোলও করছে। 

অথচ, 'সাম্প্রদায়িক' মানসিকতার মোদী সরকারের ভারত আর 'অসাম্প্রদায়িক' মানসিকতার হাসিনার বাংলাদেশের পার্থক্য , একসময় হিন্দু রাষ্ট্র থাকা হিন্দু প্রধান 'সাম্প্রদায়িক' নেপালের চেয়েও অনেক বেশি সাম্প্রদায়িক এই মুসলিম প্রধান 'অসাম্প্রদায়িক' বাংলাদেশ প্রমাণ করে দিচ্ছে একজন সাম্প্রদায়িক হিন্দুত্ববাদী মানুষও একজন তথাকথিত অসাম্প্রদায়িক মানসিকতার মুসলমানের চেয়েও যে বেশি অসাম্প্রদায়িক হয় । 

সাম্প্রদায়িক বিশ্ব হিন্দু পরিষদ একেবারে লিখিত দিয়ে মনুসংহিতাকে বাতিল করে দিয়েছে, আই এস, তালিবান, এমনকি জামাত কেন, কোন মডারেট মুসলমানের কাছে দাবি করতে পারবেন কি শরিয়ত বাতিলের? 

বিজেপি = জামাত, RSS = IS ! 

আরও কত কি যে এরকম অযৌক্তিক কথা ইসলামপন্থী হিন্দু বিদ্বেষী বামপন্থী আঁতেলদের বলতে হয় ! একেবারে অঙ্ক কষে দেখিয়ে দেওয়া যাবে হিন্দু মুসলমানের বিভিন্ন স্কেল বা মাপকাঠিতে কত যে পার্থক্য, এমনকি দুই সম্প্রদায়ের মৌলবাদীদেরও। এরকম একশো সাতাশটা উদাহরণ দিয়ে দেখাতে পারবো যে, মানসিকতার দিক দিয়ে -

সাম্প্রদায়িক RSS = সাধারণ মুসলমান

প্রগতিশীল মুসলমান = সাধারণ হিন্দু ।

আর দুঃখিত, জামাত বা আইএসের সমমানের কাউকেই হিন্দুদের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । কারন কোন হিন্দুর পক্ষেই এতটা নৃশংস হওয়া কোনমতেই সম্ভব নয়। যে ধর্ম হিন্দুদের এমন নৃশংস হতে বাধা দেবে, সেই ধর্মই ওদের এমন নৃশংস হতে উৎসাহিত করে, মানসিক সমর্থন জোগায়। ধর্মের সমর্থনেই আলাদা ঈমানী যোশ যোগ হয় নৃশংসতায়। 

আবার এদিকে পাওয়া যাচ্ছে না মুসলমানদের মধ্যে হিন্দু প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীদের সমমানের কাউকে। কারণ ইসলাম তাঁদের এই রকম উদারতা, অন্যের প্রতি সহিষ্ণুতা, শান্তি পূর্ণ সহাবস্থান সমর্থন করে না। আর করে না বলেই ইসলামের বিধান অনুযায়ী এই মুরতাদ বা নাস্তিকদের পরিণতি হয় এই শাহজাহান বাচ্চুদের মতো, যাঁদের দাফন করতে পর্যন্ত অস্বীকার করে 'অসাম্প্রদায়িক' মানসিকতার সাধারণ মুসলমান গ্রামবাসীরা !

শাহজাহান বাচ্চুর ছবিটা ফেসবুক থেকে প্রাপ্ত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ