বাংলা গানের পরিসর কমছে, বাংলার সিনেমাও খানিক কোণঠাসা। হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ ও তার ফলে বলিউডের দাপটে বাঙালি শিল্পীদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। বাংলা সিনেমায় উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতির প্রভাব বাড়ছে, সংলাপে ও গানে হিন্দির ব্যবহার ব্যাপক বেড়েছে। বাংলার সংস্কৃতির পক্ষে সবচেয়ে ক্ষতিকারক আজকালকার বাংলা সিরিয়াল। হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ গ্রাস করেছে সব। এমনকি বাংলা গান বাজে না কিছু রেডিও চ্যানেলে, নানা রেডিও চ্যানেলে বাংলা গান না বাজানো ও বাংলায় কথা না বলার ফতোয়া দেওয়া হয়। সময়টা দিনদিন আরও খারাপ হচ্ছে, হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী বেনিয়া কর্পোরেট পুঁজির দাপটে বাংলার সংস্কৃতি, শিল্পীরা আজ বিপন্ন। বাঁচতে গিয়ে হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের সামনে মাথা নত করতে বাধ্য হচ্ছে অনেক শিল্পী। আমরা সকলেই জানি, নানা অনুষ্ঠানে বাংলা গান করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন শিল্পীরা।
বাংলার এই সাংস্কৃতিক বিপন্নতাকে কাটিয়ে উঠতে, হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের পথে প্রতিরোধের প্রাচীর হয়ে দাঁড়াতেই তৈরি হয়েছে বাংলা পক্ষের শাখা সংগঠন 'বাংলা শিল্পী পক্ষ'। সেদিন ছিল এক ঐতিহাসিক দিন। বাংলা শিল্পী পক্ষের প্রথম কনসার্ট শ্রদ্ধেয় আইয়ুব বাচ্চুর স্মরণে। লড়াই বাস্তবের মাটিতে শুরু হয়েছে সেদিনই। বাংলার প্রতিটা প্রান্তে হাজার হাজার শিল্পী আছে। ছো থেকে মুখোশ কিমবা ব্যান্ডের গান, ভাটিয়ালী সঙ্গীত শিল্পী বা পট শিল্পী- প্রত্যকের স্বার্থেই এই বাংলা শিল্পী পক্ষ। প্রতিটা বাঙালি শিল্পীর অধিকার সুনিশ্চিত করাই লক্ষ্য আমাদের।
বাংলার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলকে হিন্দি আগ্রাসন মুক্ত করার শপথ নিচ্ছি আমরা। গ্রাম বাংলা থেকে শহর প্রতিটা শিল্পীর লড়াই এটা, এই ঐতিহাসিক লড়াইয়ে সামিল হোন। আজ আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার দিন। বাংলা গান, সিরিয়াল ও সিনেমাকে উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতি ও হিন্দির প্রভাব মুক্ত করতেই হবে। আমরা সেই দিনের স্বপ্ন দেখি, যেদিন বাংলার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল বাংলাময় হবে, প্রকৃত বাংলার ছবি ফুটে উঠবে।
আগামী পয়লা বৈশাখ (১৫ ই এপ্রিল) বাংলা শিল্পী পক্ষ বাঙালিকে এক সুন্দর সন্ধ্যা উপহার দিতে চায়। বাংলা গান, কবিতা ও নৃত্যের মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাবে বাংলা শিল্পী পক্ষ।
স্থান: আশুতোষ মেমোরিয়াল হল, হাজরা
সময় : বিকাল ৫ টা
তারিখ: পয়লা বৈশাখ
জয় বাংলা!
0 মন্তব্যসমূহ